বর্তমান ডিজিটাল যুগে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর কনজ্যুমারদের রিচ করার এবং তাদের সাথে যোগাযোগের পদ্ধতিতে আমূল পরিবর্তন এসেছে। আগে যেমন প্রিন্ট বিজ্ঞাপন, লিফলেট বিলি, বিলবোর্ড ইত্যাদি উপায়ে ব্র্যান্ডিং ও সেলিং হতো, এখন সেসবের প্রচলন আর তেমন নেই। তার বদলে ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি নতুন যুগের আবির্ভাব হয়েছে, যা খুব সহজেই ব্র্যান্ডগুলোকে তাদের কনজ্যুমারদের সাথে আগের চেয়ে আরও বেশি কানেক্ট করার সুযোগ করে দেয়।

এক কথায় ডিজিটাল মার্কেটিং হলো বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রডাক্ট, সার্ভিস এবং ব্র্যান্ডের প্রচারণা চালানোর কৌশল। এটি একটি চলমান এবং ক্রমাগত বিবর্তনশীল সিস্টেম, যা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এবং সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং থেকে শুরু করে ইমেল ক্যাম্পেইন এবং জনপ্রিয় ব্যক্তিদের সহযোগিতা পর্যন্ত সব টেকনিক ব্যবহার করে। দুনিয়া যত ডিজিটাল হচ্ছে, ততই সকল মাপের এবং শিল্পের ব্যবসার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং এর নীতিগুলি বোঝা এবং আয়ত্ত করা একটি অপরিহার্য দক্ষতা হয়ে উঠেছে।

ডিজিটাল মার্কেটিং কেন করবেন?

দিন যতো যাচ্ছে, ডিজিটাল মার্কেটিং ততোই বিজনেস স্ট্র্যাটেজির একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। এটা যেকোনো ধরনের প্রতিষ্ঠানের জন্যই দারুণ সুযোগ, কারণ এটি অনেক রকম সুবিধা দেয়। ডিজিটাল মার্কেটিং এর জনপ্রিয়তার পিছে প্রধান কারণগুলির মধ্যে অন্যতম হলো এর বিশাল সংখ্যক এবং নির্দিষ্ট কনজ্যুমারের কাছে পৌঁছানোর ক্ষমতা। এর ব্যবহারে মার্কেটিং আগের মতো এলাকা-নির্ভর বা ফিজিকাল হয়ে থাকেনা। বরং ডিজিটাল চ্যানেলের মাধ্যমে আপনি সারা পৃথিবীর সম্ভাব্য কনজ্যুমারদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

এছাড়াও, ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যাম্পেইনগুলো খুব সহজেই পরিচালনা করা যায়। কারণ সবকিছুই ডেটা হিসেবে পাওয়া যায়। ফলে, কোনো ক্যাম্পেইন কতটা কার্যকর হচ্ছে, সেটা আপনি রিয়েল-টাইমে ট্র্যাক করতে পারেন এবং বিশ্লেষণ করতে পারেন। এই মূল্যবান ডেটার সাহায্যে আপনি নিজের মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি আরও ডেভেলপ করতে পারবেন, ঠিক জায়গায় টাকা খরচ করতে পারবেন এবং লাভ বা রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্টের পরিমাণ বাড়াতে পারবেন। এছাড়াও ডিজিটাল মার্কেটিং অনেক ক্ষেত্রে আগের বিজ্ঞাপনের চেয়ে কম খরচে হয়। তাই কম বাজেটে চলা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য এটা একটা দারুণ সুযোগ।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর ধরণ

ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেক ধরনের টেকনিক আছে। এগুলোকে মোটামুটিভাবে দুইভাগে ভাগ করা যায়ঃ অনলাইন মার্কেটিং এবং অফলাইন মার্কেটিং

অনলাইন মার্কেটিং

অনলাইন মার্কেটিং বিভিন্ন ডিজিটাল প্লাটফর্ম এবং চ্যানেল নিয়ে গঠিত। যেমনঃ

১। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা SEO: আপনার ওয়েবসাইট এবং কন্টেন্টকে এমনভাবে সাজানো, যাতে গুরুত্বপূর্ণ কী-ওয়ার্ডগুলোর জন্য সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজে র‍্যাঙ্কিং এ উপরে আসে। এতে আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিবিলিটি বাড়ে এবং অর্গানিক ট্রাফিক আসে।

২। সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং বা SEM: গুগল এডসের মতো পেইড এডভার্টাইজিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে নির্দিষ্ট কী-ওয়ার্ডের উপর ভিত্তি করে সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজে আপনার বিজ্ঞাপনগুলি সবার উপরে দেখানো।

৩। কন্টেন্ট মার্কেটিং: মূল্যবান, প্রাসঙ্গিক এবং নিয়মিত কন্টেন্ট (যেমনঃ ব্লগ পোস্ট, ভিডিও, পডকাস্ট ইত্যাদি) তৈরি এবং শেয়ার করে আপনার টার্গেট কনজ্যুমারদের আকর্ষণ করা এবং তাদের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখা।

৪। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং: ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোকে কাজে লাগিয়ে আপনার ব্র্যান্ডের প্রচার করা, আপনার গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ করা এবং আপনার ওয়েবসাইটে ট্রাফিক আনা।

৫। পে-পার-ক্লিক এডভার্টাইজিং: গুগল এডস বা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের মতো জায়গায় পেইড এডভার্টাইজিং ক্যাম্পেইন চালানো, যেখানে কেউ আপনার এডে ক্লিক করলে আপনি একটা নির্দিষ্ট ফি দেন।

৬। ইমেইল মার্কেটিং: ইমেইল লিস্ট তৈরি করে গ্রাহকদের কাছে প্রচারমূলক মেসেজ, নিউজলেটার এবং অন্যান্য ধরনের কন্টেন্ট পাঠানো।

অফলাইন মার্কেটিং

যদিও ডিজিটাল মার্কেটিং মূলত অনলাইন প্লাটফর্মগুলোকে কেন্দ্র করে হয়, তবুও এর অফলাইন মার্কেটিং পদ্ধতিও যথেষ্ট কার্যকর। যেমনঃ

১। এনহান্সড অফলাইন মার্কেটিং: আগেকার প্রচলিত মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজিকে ডিজিটালাইজ করা। যেমন প্রিন্ট বিজ্ঞাপনে QR কোড ব্যবহার করা বা টিভি বিজ্ঞাপন থেকে দর্শকদের ওয়েবসাইটে পাঠানো।

২। ফোন মার্কেটিং: টেলিমার্কেটিং পদ্ধতি ব্যবহার করে সম্ভাব্য কনজ্যুমারদের সরাসরি ফোনে যোগাযোগ করা।

৩। রেডিও মার্কেটিং: রেডিও বিজ্ঞাপন বা স্পন্সরড সেগমেন্টের মাধ্যমে আপনার প্রডাক্ট বা সার্ভিসের এড দেওয়া।

৪। টেলিভিশন মার্কেটিং: আপনার ব্র্যান্ড এবং পণ্যের প্রচারের জন্য টিভি বিজ্ঞাপন, প্রডাক্ট প্লেসমেন্ট বা স্পন্সরড কন্টেন্টের সাহায্য নেওয়া।

ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে কি কি প্রয়োজন?

ডিজিটাল মার্কেটিং এ সফল হতে আপনার কিছু টেকনিকাল স্কিল, মার্কেটিং নলেজ, ক্রিয়েটিভিটি এবং নিয়মিত প্র্যাকটিসের একটা পারফেক্ট কম্বিনেশন প্রয়োজন। তার একটা প্রাথমিক ধারণা নিচে দেওয়া হলো –

মার্কেটিং এবং ব্যবসায়িক জ্ঞান

ডিজিটাল মার্কেটিং এ সবার আগে যেটার প্রয়োজন হয় তা হলো মার্কেটিং এবং ব্যবসায়িক নলেজ। মার্কেটিং এর মূলনীতি, কনজ্যুমারের আচরণ এবং ব্যবসায়িক কৌশল সম্পর্কে আপনার নলেজ যতো স্ট্রং হবে, ব্যবসায় উন্নতি করার সম্ভাবনা ততো বেড়ে যাবে। এসবের মধ্যে রয়েছে –

১। মার্কেট রিসার্চ এবং কনজ্যুমার এনালাইসিস

২। ব্র্যান্ডিং এবং পজিশনিং

৩। কন্টেন্ট ক্রিয়েটিং এবং কপিরাইটিং

৪। মার্কেটিং ক্যাম্পেইন পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন

৫। কনভার্শন রেট অপটিমাইজেশন

টেকনিকাল স্কিল

মার্কেটিং এবং ব্যবসায়িক জ্ঞানের পরেই যেটা গুরুত্ব বহন করে তা হলো টেকনিকাল স্কিল। এটা বিভিন্ন টুলস এবং প্লাটফর্মের উপর নির্ভর করে। তাই ডিজিটাল মার্কেটিং সফল করতে এই বিষয়গুলোতে দক্ষতা অর্জন করা জরুরি। এগুলো হলো –

১। ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট (এচটিএমএল, সিএসএস, জাভা স্ক্রিপ্ট)

২। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন মেথড

৩। এনালাইটিক্স টুলস (যেমন, গুগল এনালাইটিক্স)

৪। সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট টুলস

৫। ইমেল মার্কেটিং সফটওয়ার

৬। গ্রাফিক ডিজাইন এবং ভিডিও এডিটিং

ক্রিয়েটিভিটি

ডিজিটাল মার্কেটিং সঠিকভাবে প্রয়োগ করার জন্য ক্রিয়েটিভিটি সবচেয়ে বেশি কাজে লাগে। আপনি যতো ক্রিয়েটিভভাবে মার্কেটিং করতে পারবেন, আপনি ততোটাই ভালোভাবে কনজ্যুমারদের আকৃষ্ট করতে পারবেন। যেসব বিষয়ে আপনাকে ক্রিয়েটিভ হতে হবে তা হলো –

১। আকর্ষণীয় এবং এনগেজিং কন্টেন্ট তৈরি করা

২। দৃষ্টিনন্দন মার্কেটিং ম্যাটেরিয়াল ডিজাইন করা

৩। অনন্য এবং কার্যকর ক্যাম্পেইন আইডিয়া তৈরি করা

৪। লেটেস্ট ট্রেন্ড এবং সেরা মেথড সম্পর্কে আপডেট থাকা

প্র্যাকটিস

অন্য যেকোনো দক্ষতার মতোই ডিজিটাল মার্কেটিং এ দক্ষতার জন্য নিয়মিত প্র্যাকটিসের প্রয়োজন আছে। আপনি যতো প্র্যাকটিস করবেন, আপনার এক্সপেরিয়েন্স ততো বাড়বে। আর এটা সফল ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য অনেক জরুরি। আপনি পোর্টফোলিও তৈরি করা, বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করা, এমনকি স্থানীয় ব্যবসার জন্য স্বেচ্ছাসেবায় কাজ করা ইত্যাদির মাধ্যমে ভালোভাবে প্র্যাকটিস করতে পারবেন এবং নিজের ফিল্ড স্কিল আরও ডেভেলপ করতে পারবেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার উপায়

ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার অনেক রকম উপায় আছে। তার কিছু হলো ফ্রি এবং কিছু পেইড। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো –

YouTube:  ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়ে শিক্ষামূলক ফ্রি কন্টেন্টের এক বিশাল ভান্ডার হলো ইউটিউব।  আপনি এখানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন দিক নিয়ে তৈরি করা অসংখ্য টিউটোরিয়াল, কোর্স ভিডিও এবং বিশেষজ্ঞদের মতামত খুঁজে পাবেন।

অনলাইন কোর্স:  কোর্সেরা, ইউডেমি এবং এডএক্সের মতো অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্মগুলো সুনামধন্য প্রতিষ্ঠান এবং ইন্ডাস্ট্রি স্পেশালিস্টদের কাছ থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপর তথ্য নিয়ে ব্যাপক কোর্স সরবরাহ করে। এই কোর্সগুলোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো স্ট্রাকচার লার্নিং প্যাথ, অ্যাসাইনমেন্ট এবং অনেক ক্ষেত্রেই কোর্স শেষে সার্টিফিকেট প্রদান।

সার্টিফিকেশন:  গুগল ডিজিটাল গ্যারেজ এবং হাবস্পট একাডেমি এর মতো জনপ্রিয় প্লাটফর্মে পারফর্ম করে সার্টিফিকেট নিতে পারেন, যা আপনার দক্ষতার স্বীকৃতি জানাতে এবং ডিজিটাল মার্কেটিং এ আপনাকে কনফিডেন্ট বাড়িয়ে তুলতে পারে। এই সার্টিফিকেশনগুলি প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্টে আপনার প্রতিশ্রুতি হিসেবে কাজ করে এবং নির্দিষ্ট ডিজিটাল মার্কেটিং ক্ষেত্রে আপনার এক্সপার্টিজের প্রমাণ দেয়।

বই এবং ব্লগ:  ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়ক বই এবং ব্লগ পড়ে অভিজ্ঞদের কাছ থেকে মূল্যবান ইনসাইট, কেস স্টাডি এবং সেরা স্ট্র্যাটেজি সম্পর্কে জানা যায়। যেমনঃ রায়ান ডেইসের “ডিজিটাল মার্কেটিং ফর ডামিজ” এবং মার্ক শ্যাফারের “দ্য কনটেন্ট কোড” এক্ষেত্রে জনপ্রিয় রিসোর্স।

ইন্ডাস্ট্রি ইভেন্ট এবং সেমিনার:  ইন্ডাস্ট্রি ইভেন্ট এবং সেমিনারে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নেটওয়ার্কিং এর সুযোগ, নতুন নতুন ট্রেন্ড সম্পর্কে জানা এবং অভিজ্ঞদের কাছ থেকে শেখার সুযোগ পাওয়া যায়। এই ইভেন্টগুলো ফিল্ডে সর্বশেষ অবস্থার সাথে আপডেট থাকা এবং একই মতের ব্যবসায়ীদের সাথে কানেক্টেড থাকার জন্য অনেক মূল্যবান।

ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার

এই দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে, ডিজিটাল মার্কেটিং নিঃসন্দেহে একটি আকর্ষণীয় এবং সম্ভাবনাময় ক্যারিয়ার বিকল্প হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। তাই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রডাক্ট ও সার্ভিস দেওয়ার জন্য ধীরে ধীরে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের উপর নির্ভর করছে, যার ফলে দক্ষ ডিজিটাল মার্কেটিং পেশাদারদের চাহিদাও ব্যাপকভাবে বাড়ছে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে খুব সহজেই পৌঁছানো সম্ভব। এর ক্যাম্পেইনগুলি নির্দিষ্ট কনজ্যুমারদের টার্গেট করার জন্য ডিজাইন করা যেতে পারে, যার ফলে বিজ্ঞাপনের প্রভাব সর্বাধিক করা যায়। ক্যাম্পেইনগুলির পারফরম্যান্স ট্র্যাক করা এবং পরিমাপ করা সহজ, যা ব্যবসাগুলিকে তাদের বাজেট সর্বোত্তমভাবে ব্যবহার করতে সাহায্য করে। আগেকার মার্কেটিং পদ্ধতির তুলনায় ডিজিটাল মার্কেটিং তুলনামূলকভাবে কম খরচে করা যায়। এসব কারণেই ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ারের গড়ার জন্য এখন একটি সম্ভাবনাময় পথ।

বিভিন্ন ক্যারিয়ার টাইপ

ডিজিটাল মার্কেটিং স্পেশালিস্ট: বিভিন্ন চ্যানেলে কার্যকর ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি বিকাশ ও বাস্তবায়নে রেস্পন্সিবল এবং ব্যাপক কাজ জানেন।

এসইও স্পেশালিস্ট: সার্চ ইঞ্জিনে ওয়েবসাইট ও কন্টেন্টের র‍্যাঙ্কিং উন্নত করে অর্গানিক ট্রাফিক বাড়ানোর কাজে নিয়োজিত।

কন্টেন্ট মার্কেটিং স্পেশালিস্ট: কনজ্যুমারদের আকর্ষণ করতে ও ওয়েবসাইটে  ধরে রাখতে মূল্যবান, আকর্ষণীয় কন্টেন্ট তৈরি ও বিতরণের দায়িত্বে থাকেন।

সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার: একটি ব্র্যান্ডের সোশ্যাল মিডিয়া উপস্থিতি পরিচালনা করেন, ফলোয়ারদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেন এবং সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ক্যাম্পেইন তৈরি করেন।

পে-পার-ক্লিক স্পেশালিস্ট: গুগল এডস ও সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে পে-পার-ক্লিক বিজ্ঞাপন ক্যাম্পেইন পরিচালনা ও ডেভেলপমেন্টের কাজে থাকেন।

ইমেইল মার্কেটিং স্পেশালিস্ট: ইমেইল লিস্ট তৈরি, ক্যাটাগরি এবং ক্যাম্পেইন তৈরি সহ ইমেইল মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি ডেভেলপ ও বাস্তবায়ন করেন।

অ্যানালিটিক্স স্পেশালিস্ট: বিভিন্ন ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেল থেকে তথ্য বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা করে স্ট্র্যাটেজি তৈরি ও উন্নত করার কাজে থাকেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং ইনকাম

বাংলাদেশে ডিজিটাল মার্কেটারদের আয় তাদের একপেরিয়েন্স, স্কিল, ইন্ডাস্ট্রি ,এবং নির্দিষ্ট গ্রেড ইত্যাদি বিভিন্ন কারণের উপর নির্ভর করে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হতে পারে। সঠিকভাবে বলা সম্ভব না হলেও ধারণা দেওয়ার জন্য বলা যেতে পারে, এন্ট্রি লেভেলে কর্মরত ডিজিটাল মার্কেটাররা প্রতি মাসে প্রায় ১৫,০০০ টাকা থেকে ৩০,০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন, যেখানে আরও অভিজ্ঞরা ৫০,০০০ টাকা থেকে ১,০০,০০০ টাকা বা তার চেয়ে বেশি আয় করতে পারেন।

এটা শুধুমাত্র একটা আন্দাজ। আপনার দক্ষতা, পোর্টফোলিও এবং কোম্পানির আকার ও অবস্থানের উপর ভিত্তি করে ইনকাম কমবেশি হতেই পারে। আবার ফ্রিল্যান্স ডিজিটাল মার্কেটার এবং পরামর্শদাতাদের ক্লায়েন্ট বেস এবং প্রকল্পের হারের উপর ভিত্তি করেও আয়ের মাত্রা বিভিন্ন হতে পারে।

পরিশেষ

তো এই হলো ডিজিটাল মার্কেটিং এর আদ্যপান্ত। বর্তমানে অনেকাংশেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের টার্গেট কনজ্যুমারদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন, তাদের আগ্রহ বাড়ানো এবং সফলভাবে প্রডাক্ট ও সার্ভিস সেল করতে ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবহার করে। আপনি উপরে উল্লেখ করা উপায়গুলো অবলম্বন করে ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন। স্টেবল মার্কেটাররা তাদের ব্যবসা আরও বাড়াতে এবং নতুনরা ফ্লেক্সিবল ক্যারিয়ার হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিং বেছে নিতে পারেন। নিয়মিত শেখা, প্র্যাকটিস করা এবং ইন্ডাস্ট্রির নতুন ধারার সাথে খাপ খাইয়ে নিয়ে, আপনি চাইলেই ডিজিটাল মার্কেটিং এ সফলতা অর্জন করতে পারেন। পরিশেষে কিছু ইন্টারেস্টিং পরিসংখ্যান শেয়ার করার মাধ্যমে এখানেই শেষ করছি –

সারা বিশ্বে ৭০% কনজ্যুমার কেনার আগে প্রডাক্ট সম্পর্কে অনলাইনে রিসার্চ করে।

সারা বিশ্বে ৫৫% কনজ্যুমার প্রডাক্ট কেনার আগে সোশ্যাল মিডিয়ার উপর নির্ভর করে।

সারা বিশ্বে ৫১% কনজ্যুমার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অনলাইনে কেনাকাটা করে।

সারা বিশ্বে ৮৪% সেলার এবং মার্কেটার কনজ্যুমারদের ডেটা সংগ্রহের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

× How can I help you?